Wednesday, May 30, 2012

শূন্যতা কি সৃষ্টিশীল? - শাহাদাতুর রহমান সোহেল


শূন্যতা কি সৃষ্টিশীল?
-    শাহাদাতুর রহমান সোহেল

শূণ্যতার চেয়ে বেশী কি আছে সৃষ্টিশীল?
তুমি জানো, শূণ্যতায় সৃজিত হয় শুধুই শূণ্যতা;
শূণ্যের সাথে শূণ্য যোগ দাও  অথবা বিয়োগ,
গুণ কর, ভাগ কর - ফলাফল শূণ্য সর্বদাই,
শূণ্যের উপর কেউ কি নির্মাণ করতে পারে
অলিম্পাস মন্সের মত স্কাইস্ক্রেপার?
গ্রেট রেরিয়ার রীফের মত একুরিয়াম?
শূণ্যতা কি করে হয় সৃষ্টিশীল?
শূণ্যতাতেই সৃষ্টি হয় আশরাফুল মাখলাকাতের
মহান শিল্প-সাহিত্যঃ
বেদনার্ত শূণ্যতাতেই বিঠোফেনের নবম সিম্ফনী,
শাহ্জাহানের বিস্ময় তাজমহল,
অন্ধ হোমারের ইলিয়াড-ওডিসি মহাকাব্য;
তারও চেয়ে অনেক বেশী আমি জানি-
শূন্যতার চেয়ে বেশী কি আছে সৃজনশীল?
শূণ্য থেকেই বিশ্ব বিধাতা সৃষ্টি করেন সারা চরাচর।

Monday, May 14, 2012

ইকবালের কবিতা : মুসা আল হাফিজ


আল্লামা ইকবাল উপমহাদেশের মুক্তিকামী মানুষের আত্মজাগরণের পথিকৃৎ এক মহান কবি দার্শনিক ও শিল্পী প্রতিভা। তার সৃষ্টি, শিক্ষা, দৃষ্টি ও আদর্শের মধ্যে আমাদের জাতিসত্তার আত্মপরিচয়ের স্বভাব ও স্বরূপ অসামান্য উজ্জ্বলতায় উৎকীর্ণ। ফলে ইকবাল সত্তায় কেবল এক কবির বসবাস নয় বরং রয়েছে এক মহান আদর্শের উত্তরাধিকার। তার আবির্ভাব ছিলো উপমহাদেশের ঘোরতর দুঃসময়ে ত্রাণকর্তার মতো। তার স্বতন্ত্র, দুঃসাহসী উচ্চারণ চুরমার করতে চেয়েছে পরাধীন মানুষের হীনম্মন্যতার দেয়াল। তাদের চেতনার ঠান্ডা আকাশ মুখর করে তুলেছে তার চিন্তার জ্যোতিষ্কের কোলাহল। সহিষ্ণু মুসলিম চেতনাসীমায় ইকবালের কবিতা ছিলো স্বপ্নের পুনরুত্থানের মতো। তার চিন্তাধারা ছিলো স্বর্গের সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসা নবজন্মের ইশতেহার। ক্ষুদ্রতার, সংকীর্ণতার, সংস্কারের সকল প্রাচীরের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলো তার কবিতা। ফলে সেই কবিতার জগত ছিলো গতির গমক, চিন্তার চমক ও দ্রোহী পদক্ষেপে প্রকম্পিত।
ইকবালের কবিতায় কান পাতলেই মানবাত্মার কুচকাওয়াজের শব্দ শুনা যায়। শুনা যায় বসন্তের হাসির মতো ছলকে উঠা শিল্পের স্রোতের স্বনন রব। চোখ মেললেই দেখা যায় উদ্দাম মৃগহরিণ বাতাসের অরণ্যে বিচরণ করছে, মহামানবিকতার চকচকে অঙ্গীকার সূর্যের আগুনে পতাকার মতো লাগছে, তার পতপত আছাড়ে গুড়ো রোদের মতো ছিটকে পড়ছে ইতিহাস। ইকবালের দর্শন নিয়ে কথার উপর কথামালা হয়েছে প্রচুর। তার জীবনবোধ, আত্মোপলব্ধি, চিন্তা ও পয়গামের বিষয়টি এখন আর অগম্য নয়। ইকবাল কাব্যের অনুবাদের মাধ্যমে বাংলাভাষী পাঠক পরিচিত হয়েছেন তার ভাবনাবলয়ের সাথে। কিন্তু অনুবাদ থেকে যে জিনিসটি তারা পাননি, সেটা হলো ইকবাল-কাব্যের ঐন্দ্রজালিক শিল্প ও সৌন্দর্য। কারণ বাংলা ভাষায় যারা ইকবাল-কাব্যের অনুবাদ করেছেন, তাদের অনেকেই সৃজনক্ষমতার অভাবে কিংবা আক্ষরিকভাবে মূলানুগ হবার মূঢ় বাসনায় উদ্দীপিত হয়ে ইকবালের কবিতার বিপর্যয় ডেকে এনেছেন। অমীয় চক্রবর্তি, ফররুখ আহমদ, সৈয়দ আলী আহসান প্রমুখের কয়েকটি অনুবাদ ছাড়া অন্যান্য অনুবাদে দার্শনিক ইকবালকে পাওয়া যায়, কিন্তু কবি ইকবালের দেখা মিলে না। অথচ দার্শনিক ইকবালের চেয়ে কবি ইকবালের মহিলা কোনো অংশেই কম নয়। কাব্য সৌন্দর্যে তিনি বিশ্বসাহিত্য বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন। তার সেই সৌন্দর্যের স্বরূপ কি? বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি অমীয় চক্রবর্তীর ভাষায়- ‘তাহার কবিতায় শিল্পী ও স্রষ্টার সম্মেলন ঘটিয়াছে। ফারসী ও উর্দু উভয় ভাষারই চোস্ত ও সুমার্জিত কবিতায় ইকবাল মিনারেট সমূহের সুদূরবর্তী ইশারা ও আরবীয় মরু বালুকার চাকচিক্যময় স্বপ্ন আমাদের চোখে জাগাইয়াছেন।
জীবনের বাস্তবতার পটভূমিকায় নীলিম নিঃসীমতা যেন এখানে গলিয়া পড়িতেছে। তাহার রহস্যবাদ জীবনের সম্মুখীন হইয়াছে, তবু ইহা যেন রহস্যের অতলতাকে স্পর্শের জন্য ব্যাকুল। তাহার ভাষায়ও প্রাঞ্জল শব্দাবলী যেন অগম্য অতলতাকে প্রকাশিত করিয়া দিতেছে। সুদক্ষ জহুরী যেভাবে স্বর্ণ ও মূল্যবান প্রস্তরাদি চয়ন করিয়া থাকে ইকবালও তেমনই সতর্কতাসহকারে শব্দ চয়ন করিতেন। তবুও তাহার শৈল্পিক নৈপুণ্যতা ও ভারসাম্য রক্ষার অন্তরালে স্রষ্টার বাস্তবতাবোধ প্রভমান। (ইকবাল অমীয় চক্রবর্তী, মুহম্মদ হাবীবুল্লাহ বাহার সম্পাদিত ‘কবি ইকবাল' বুলবুল হার্ডস, কলকাতা) তিনি আরো লিখেন- ‘কবি ইকবালের কাব্য কাননে বিচরণ করলে সৌরভিকুঞ্জ দেখতে পাব, খররৌদ্র ধূলিতে শ্যামল মেলে আছে, অগণ্য মনোহর বীথি আহবান করে নিয়ে যায় গভীর ভাবনার নির্দেশে। বাক্যের ভঙ্গির রসের উচ্ছল মাধুর্য এবং দিগন্ত দৃষ্টিময় ব্যঞ্জনা তার বহু কবিতায় উপকর্ষে যে ভাষা পেয়েছে, তা উর্দু বা পারসিক ধ্বনিকে অতিক্রম করে সর্বমানবের চিত্তচারী (সাম্প্রতিক; পৃষ্ঠা-১২৯)
ইকবালের কাব্য সম্পর্কে প্রখ্যাত উর্দু কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজ বলেছেন- ‘ইকবালের বাণীর প্রাণবন্ত ও শক্তির উৎস হচ্ছে তার কাব্য সৌন্দর্য। ইকবালের মতো আর কোনো কবি উর্দু কবিতায় ব্যঞ্জন ও স্বরবর্ণের এতখানি ধ্বনিবৈচিত্র সৃষ্টি করতে পারেননি। এ পদ্ধতির তিনিই উদগাতা। উর্দুকাব্যে তিনি নতুন ছন্দ প্রবর্তন করেন, প্রথম সার্থকভাবে নামবাচক বিশেষ্য ব্যবহার করেন এবং অসংখ্য নতুন শব্দ আমদানি করেন। ইকবালের অন্বেষা হলো বিশ্বজগৎ ও মানুষ, বিশ্বজগতের মুখোমুখি মানুষ। তার কবিতার শেষ কথা হলো : মানুষের কথা, মানুষের বিশ্বের কথা, মানুষের একক মর্যাদার কথা। এই মূল্যবোধ ইকবালের কবিকীর্তিক একক মর্যাদায় অভিসিক্ত করেছে।' ইকবালের নির্বাচিত কবিতা, মুহম্মদ মাহফুজ উল্লাহ লিখিত ভূমিকা, পৃ. ৯)
ইকবাল তার এই অবিস্মরণীয় মূল্যবোধ গ্রহণ করেছিলেন ইসলাম থেকে। ইসলামের সারসত্যকে ঋজু, চৈতন্য উদ্দীপক ও মর্মস্পর্শী আঙ্গিকে তিনি উপস্থাপন করেছিলেন। সেই উপস্থাপনা ছিলো যুগপথ শৈলী ও বক্তব্যে সমানভাবে ঐশ্বর্যমন্ডিত। কবিতার ঐশ্বর্য সন্ধানে আদর্শকে গৌণ করার নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না আল্লামা ইকবাল। তিনি কবিতার প্রাণ হতে পারে, এজন্যে মানবকল্যাণের মহীয়ান আদর্শ তালাশ করেছেন। এ লক্ষ্যে হাত বাড়িয়েছিলেন পাশ্চাত্যের কাব্যদর্শনের দিকে। কিন্তু সেখানে খুঁজে পাননি কাম্য আদর্শ। ইকবালের ভাষায় সেই দর্শন- ‘নিজের ছোরায় নিজেই করিবে আত্মহত্যা/পলকাডালে যে বাসা বাধা হয়, সে হয় না চিরস্থায়ী'। ইকবাল সেখানে বাহারী চাকচিক্য ছাড়া মানবজীবনের কোনো মৌল আদর্শ খুঁজে পাননি। অতএব এর পিছনে সময়পাত করে ইকবালের আক্ষেপ- ‘ইউরোপের ঐ শরাবখানায় কাটিয়েছি দীর্ঘকাল/লাভ তো কিছু হয়নি তাতে শিরোপীড়া বাড়লো ছাড়া।'
পশ্চিমা জীবনদর্শন পঠন-পর্যবেক্ষণের পর ইকবাল আত্মনিয়োগ করেন ইসলামের অন্তঃসমীক্ষায়। সেখানে তিনি আবিষ্কার করলেন মানবিক কাব্যাদর্শের আবহায়াত। সেই আদর্শের প্রতি ইকবালের বিশ্বাস ছিলো দৃঢ়। এক্ষেত্রে কারো ভ্রুকুটিকে তোয়াক্কা করতে তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। তার স্পষ্ট ঘোষণা, ‘ইউরোপ বিরক্ত হলে হোক শুনে ইসলামের নাম/সংকটে স্বনির্ভরতা এই সেই রূহের পয়গাম।' রূহের পয়গাম দ্বারা কবিতাকে কীভাবে সার্থক করে তুলতে হয়, ইকবাল তা দেখিয়েছেন কালোত্তীর্ণ সব কবিতার পটভূমিকায়। যারা কবিতাকে কোনো মৌলআদর্শের বুনিয়াদ থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবেন, ইকবালের দৃষ্টিতে তাদের কবিতা হলো পুরোহিতের আত্মার মতো জীবনের অসুস্থতা। যারা বলেন, কবিতা কেবল শিল্পের কাছে দায়বদ্ধ, আদর্শের কাছে নয়, তাদের কবিতাকে ইকবাল কুষ্ঠরোগাক্রান্ত মাংস বলে অভিহিত করেন। আদর্শের প্রশ্নে ইকবাল ছিলেন অনড়। ফলে তার কবিতার শিল্পসুষমা পাঠককে শুধু তাৎক্ষণিক আবেগে উদ্দীপিত করে না, এবং মহান এক জীবনীশক্তির পয়গামে তাকে উজ্জীবিত করে। ইকবাল চান কবিতা যেন প্রেম-বিরহ ও হৃদয়ভঙ্গজনিত করুণ অস্থায়ী সংবেদনসমূহে আবদ্ধ না থাকে। কবিতার লক্ষ্য হবে এমন অসাধারণ শিল্পসৃষ্টি, যা হোক বিকীর্ণ হবে অনন্ত আলো ফোয়ারা, প্রবাহিত হবে সৌরভের এমন ঘর ঝরণাধারা, যার সংস্পর্শে আসা মাত্রই মনে হবে-
‘শিল্পীদের সৃষ্টিগুলো ফেরদৌসের সমতূল্য
উন্মুক্ত হলো অস্তিত্বের গোপন ভান্ডারের আবরণ'
কবিতা শিল্পসাফল্য পেলেই পুলকিত হন না, বরং স্বকীয় জীবনাদর্শের প্রবাহধারাকে জাতীয় জীবনে প্রত্যক্ষ না করা পর্যন্ত তার কবিতা বিলাপ করতে থাকে। ইকবাল বলেন,-‘মাঁয় বুলবুলে নালা হো এক উজড়ে গুলিস্তাঁ কা' শূন্য পুকাননের আমি এক বিলাপকারী বুলবুলি। কেন সেই বিলাপ? কারণ ইকবাল দেখেছেন মুসলমানদের ‘কলব মে সোজ নেহি, রূহ মে ইহসাস নেহি।' আত্মার মধ্যে আন্দোলিত প্রাণবান কোনো অনুভূতি নেই। দিলের মধ্যে নেই কোনো তীব্রদহন। এই প্রাণহীনদের মধ্যে ইকবাল খোঁজে পান না সত্যিকার মুসলমানের অবয়ব। তিনি বলেন, শোর হায় হো গায়ে দুনইয়া সে মুসলমাঁ না বুদ/হাম ইহ কাহতে হায় কে থে ভী কহী মুসলমাঁ মৌজুদ?' আওয়াজ উঠেছে ধ্বংস হয়ে গেছে মুসলমান। আমি বলি, পৃথিবীতে মুসলমান কোথায়? আত্মবিস্মৃত, পরানূকরণবাদী, নির্জীবদেরকে ইকবাল ইসলামের প্রতিনিধি ভারতে রাজি নন। তারা জীবনের কর্তব্য থেকে পলায়ন করে খোদার খেলাফতের যিম্মাকে অবজ্ঞা করেছে। ফলে খোদা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। কারণ, ‘খোদা-ই জিন্দাহ, জিন্দাহ কা খোদা হায়।' জীবিত খোদা জীবিতদেরই খোদা। এই সব জীবমৃতের জন্য ইকবালের প্রার্থনা-ইয়া রব। দিলে মুসলিম কো ওহ জিন্দাহ তামান্না দে/জে কালব কো গরমা দে, জো রোহ কো তড়পা দে/হে রব। মুসলমানদের অন্তরে তুমি জীবন্ত উদ্দীপনা জাগিয়ে দাও। যা কালবকে উত্তপ্ত করে, উজ্জীবিত করে নির্জীব আত্মাকে।
ইকবালের এই প্রার্থনা হলো- চৈতন্যময় আত্মার এক পরম আলোর দিকে তন্ময় ও নিরন্তর ঊর্ধ্বারোহণের সবাক চিত্র। যেখানে কবি আত্মার উদ্ভাসনে মুসলিম জাতিগোষ্ঠী মহামানবতার সূর্যের জ্বালানি হিসেবে ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাসী। সেটা নিশ্চিত করবে ইসলাম। কারণ, ইসলাম নামক ‘আকাশের উপত্যকায় সূর্যদীপ্র কতো জ্যোতিস্রোতের বৈভব/বিচ্ছিন্ন সূর্যের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে এ যেনো ঘনিষ্ট কোলাকোলি/পশ্চিম জানি কখনো পাবে না সেই আলোকের ছটা/যন্ত্রোস্থিত ফিরিঙ্গির ধূম্রজটাজালে/সেখানে আকাশজুড়ে অন্ধকার শুধু আচ্ছন্নতা।' অন্ধকারের এই আচ্ছন্নতা কাটিয়ে উঠে মুসলমানদের আত্মশক্তিতে জেগে ওঠার আহবান তিনি শুনিয়েছেন-
তুমি এক তরবারি, নিজের খাপ থেকে বাইরে এসো
বাইরে এসো, বাইরে এসো, বাইরে এসো
সম্ভাবনাকে ঢেকে ফেলা সব পর্দা ফেলো ছিঁড়ে
চন্দ্রকে নাও, সূর্যকে ধরো, নক্ষত্রকে পুষো
ইকবাল বিশ্বাস করতেন তার বিস্ময়কর কাব্যমহিমায় মুসলিম চৈতন্যে গোলাপের শিখা জ্বলবে। বসন্তের ফুলের মতো তারা জেগে উঠবে। তিনি দেখতে পেয়েছিলেন চতুর্দিকে এই সম্ভাবনা। ইকবাল নিজেকে সম্বোধন করে বলেন, তোমার অগ্নিনিঃশ্বাসে গোলাপের শিখা জ্বলছে-
হে বাগানের পাখি,
এটাই হলো তোমার গানের পুরস্কার
আরেকটি কবিতায় তিনি বলেন-
আমি বসন্তের সুরেলা নকীব
আমার মনের চারধারে প্রেমের শিখা জ্বলছে
আজ আমি একা বলে উপেক্ষা করো না
পেছনে আমার ফুলের কাফেলা আসছে।
মানবিকতার নিশানবরদার হিসেবে ইসলামের অনুসারীদের সম্বোধন করে কথা বললেও ইকবালের লক্ষ্য ছিলো সব মানুষের কল্যাণও বিশ্বজনীন শুভেচ্ছা। তার এই আদর্শবাদিতার ছিলো না কোনো সাম্প্রদায়িকতার বার্তাবাহী। মানবতার এক মহান কবিগুরু। সর্বত্রই বরেণ্য তিনি, কী প্রাচ্যে, কী পাশ্চাত্যে। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের ফেডারেল আদালতের বিচারপতি উইলিয়াম ডগলাস ইকবালের সমাধি দর্শনের অভিজ্ঞতাকে তীর্থযাত্রা বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে- ‘ইকবাল ছিলেন সব জাতির, তার ভাবনার বিশ্বজনীন আবেদন রয়েছে। তিনি সব দেশের, সব ভাষার মানুষের শুভেচ্ছার মানসিকতাকে লক্ষ্য করে কথা বলেছেন। তিনি মানুষের নিত্য- নৈমিত্তিক জীবনাচার থেকে নিয়ে মানুষের স্রষ্টা মানুষের বিশ্বজগতসহ অনেক কিছুর গান গেয়েছেন। তার সুরে রয়েছে দার্শনিকতার অনবদ্য ঝংকার। নতুন পর্থে ভবিষ্যতের পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য তার ছিলো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব।

Sunday, March 11, 2012

আছেন আমার মোক্তার | Achen Amar Muktar - গাজী মাজহারুল আনোয়ার,কণ্ঠশিল্পী: সৈয়দ আব্দুল হাদী


আছেন আমার মোক্তার
আছেন আমার ব্যারিস্টার
শেষ বিচারের হাইকোর্টেতে
তিনিই আমায় করবেন পার
আমি পাপী তিনি জামিনদার

মনের ঘরে তালা দিয়া
চাবি লইয়া আছেন সাঁই
আমি অধম সাধ্য কি তার
হুকুম ছাড়া বাইরে যাই
মনরে… ওহো মনরে…

দুই কান্দে দুই মুহূরি
লিখতে আছেন ডাইরি
দলিল দেইখা রায় দিবেন
টাকা পয়সার নাই কারবার
সময় থাকতে মনা হুশিয়ার
আমি পাপী তিনি জামিনদার

সেদিনের সেই ইস্টিশনে
থাকবে নানান প্যাসেন্জার
দ্রুতযানে পাড় হবে সে
টিকিট কাটা আছে যার
মনরে… ওহো মনরে…

পারাপারের থাকলে তাড়া
সঙ্গে নিও গাড়ি ভাড়া
জবাবদিহি করতে হবে
ধরলে টিকিট কালেক্টার
সময় থাকতে মনা হুশিয়ার
আমি পাপী তিনি জামিনদার

কণ্ঠশিল্পী: সৈয়দ আব্দুল হাদী, সুরকার: আলাউদ্দিন আলী, ছায়াছবি: গোলাপী এখন ট্রেনে

Tuesday, January 10, 2012

সবাই বলে বয়স বাড়ে, কথা-কুটি মনসুর, শিল্পী-রথীন্দ্রনাথ রায়

সবাই বলে বয়স বাড়ে
কথা-কুটি মনসুর, শিল্পী-রথীন্দ্রনাথ রায়


সবাই বলে সবাই বলে বয়স বাড়ে,
আমি বলি কমে রে,আমি বলে কমে
[এই মাটির ঘরটা খাইলো ঘুনে]-২
প্রতি দমে দমে রে
সবাই বলে সবাই বলে বয়স বাড়ে
আমি বলি কমে রে,আমি বলে কমে।


মত্ত নিয়া মজে রইলাম সত্য চিনলাম না
লোহা দিয়া নাও গড়িলাম,মানিক চিনলাম না
আমি তার কাছে কি বলব গিয়া
কিবা গেলাম সঙ্গে লইয়া রে
মন ওরে ও হো ও মন রে
আমি তার কাছে কি বলব গিয়া
কিবা গেলাম সঙ্গে লইয়া রে
শুধু ঘুরলাম,ফিরলাম,খাইলাম দাইলাম
একি মতি ভ্রমে রে
সবাই বলে সবাই বলে বয়স বাড়ে
আমি বলি কমে রে,আমি বলে কমে।



তবিলদারি কইরা নিজেই হইলাম মহাজন
নিক্তি দিয়া অন্তরটারে,করলাম না ওজন
আমি বাত্তি ছাড়া ওই কবরে
কেমনে যাব হিসাব করে রে
মন ওরে ও হো ও মন রে
আমি বাত্তি ছাড়া ওই কবরে
কেমনে যাব হিসাব করে রে
শুধু ঘাটতি হইয়া পাপের বোঝা
থাকবে শুধুই জমে রে
সবাই বলে সবাই বলে বয়স বাড়ে
আমি বলি কমে রে,আমি বলে কমে
[এই মাটির ঘরটা খাইলো ঘুনে]-২
প্রতি দমে দমে রে
সবাই বলে সবাই বলে বয়স বাড়ে
আমি বলি কমে রে,আমি বলে কমে।