Thursday, January 10, 2019

আঞ্চলিক ভাষার অভিধান: ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সম্পাদিত


আঞ্চলিক ভাষার অভিধান বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপভাষার একটি সংকলন গ্রন্থ। ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সম্পাদনায় ১৯৬৫ সালে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষাসমূহের সংকলন-জাতীয় গ্রন্থ এটিই প্রথম।

ইতিহাস

বাংলা একাডেমীর তত্ত্বাবধানে ১৯৫৮ সালের প্রথম দিকে এ অভিধান প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ৪৫৩ জন সংগ্রাহকের মাধ্যমে মোট ১,৬৬,২৪৬টি আঞ্চলিক শব্দ সংগৃহীত হয়। সংশোধন ও বিচার-বিবেচনার পর এ থেকে প্রায় পঁচাত্তর হাজারের মতো শব্দ সংকলনের জন্য গৃহীত হয়। ১৯৬০ সালের ডিসেম্বর থেকে সংকলনের কাজ শুরু হয়। ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, মুহম্মদ আবদুল হাই, মুনীর চৌধুরী এবং ডক্টর কাজী দীন মুহম্মদকে নিয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন বাংলা একাডেমীর তৎকালীন মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান।

খন্ড

অভিধানটির তিন খন্ডের বিষয় পরিকল্পনা ছিল, প্রথম খন্ড: আঞ্চলিক ভাষার অভিধান। এর বিষয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবহূত শব্দাবলির সংগ্রহ। দ্বিতীয় খন্ড: ব্যবহারিক বাংলা অভিধান। এর বিষয় বাংলা সাহিত্যে বিশেষত পূর্ব পাকিস্তানি সাহিত্যে ব্যবহূত শব্দাবলির সংকলন। তৃতীয় খন্ড: বাংলা সাহিত্যকোষ। এর বিষয় বাংলা সাহিত্যে ব্যবহূত বিশেষার্থক শব্দ, প্রবাদ-প্রবচন, উপমা, রূপক, উল্লেখ ও উদ্ধৃতি এবং মুসলমান সাহিত্য-সাধকদের সংক্ষিপ্ত জীবনী।

প্রকাশনা

অভিধানটি সাত বছরের প্রচেষ্টায় (১৯৫৮-১৯৬৪) সহস্রাধিক পৃষ্ঠা নিয়ে প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে। ১৯৭৩ সালে এর দ্বিতীয় মুদ্রণ এবং ১৯৯৩ সালে ১,০৫৮ পৃষ্ঠায় এর প্রথম পুনর্মুদ্রণ প্রকাশিত হয়। গ্রন্থের অপর দুটি খন্ড আর প্রকাশিত হয়নি।

বিশেষ তথ্য: বাংলা ভাষার বিভিন্ন আঞ্চলিক রূপ নিয়ে প্রথম গবেষণার পরিচয় পাওয়া যায় গ্রিয়ারসনের The Linguistic Survey of India (১৯০৩-১৯২৮) নামক গ্রন্থে। এর প্রথম খন্ডে বাংলাদেশের উপভাষা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের আঞ্চলিক অভিধান রচনার প্রথম প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন এফ.ই পার্জিটার তাঁর Vocabulary of Peculiar Vernacular Bengali Words (১৯২৩) নামক গ্রন্থের মাধ্যমে।

Source: মাহমুদ নাসির জাহাঙ্গীরি http://bn.banglapedia.org


No comments:

Post a Comment