সেক্রেটারিয়েট
-আবদুল কাদির খান
এখন দশটা দশ মিনিট
মানুষের কোলাহলে ভরপুর সেক্রেটারিয়েট
গেট পার হয়ে ঢুকেছি
যেন ‘পুলছেরাত’ পার হয়েছি।
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললুম।
এক, দুই, তিন চার, পাঁচ
লিফটম্যান ব্যাস
থামাও ভাই নামবো।
এটা কোন দপ্তর?
রাজস্ব, বাণিজ্য না স্বাস্থ্য ?
লেখা আছে তীর চিহ্নে
পেয়ে যাবেন অবশ্য
ঢুকুন।
সালাম ঠুকুন।
নিস্তব্ধতা দশ মিনিট
কেরানী সাহেব
চশমার ফাঁকে কৃপা করলেন,
চোখ তুললেন
কী চাই?
প্রশ্নবাণ ছুড়লেন।
দেখুন আমার অমুক ফাইলটা ...................।
খু-উ-ব ব্যস্ত
একটু পরে আসুন।
এক প্যাকেট ক্যাপস্টান বা ডানহিল
আলবৎ ফাইল ঠিক।
সেকশন অফিসারের রুমে ?
ঢুকে পরুন
মিষ্টি কথায় প্রশ্নের উত্তর
বাসায় দেখা করুন।
কাজ আছে?
পরিচালকের কাছে?
উপ, যুগ্ন বা একান্ত সচিবের কাছে?
কিছু ছাড়ুন পিয়নের হাতে
কাজ হাসিল হবে তাতে
মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে
কিছু বলার আছে?
একান্ত সচিবকে ধরে এপয়েন্টমেন্ট করতে হয়
দুই হপ্তা বা তারও বেশী
সময় লাগবে নিশ্চয়ই ।
আপনার অবশ্য জরুরী কাজ আছে
মন্ত্র সাহেব পাঠালেন সচিবের কাছে
ফাইলটা তৈরী করে পাঠান
সচিব মহোদয় বড্ড ব্যস্ত
হাতে তার রাজ্যের কাজ।
কিছিিদন পর শুরু হল ফাইল যাত্রা
সচিব থেকে যুগ্ন-সচিব
যুগ্ন থেকে উপসচিব
উপ থেকে পরিচালক
আরো নিচে আরো নিচে
দপ্তর তেকে দপ্তরে
ঘুরে ফিরে ধীরে ধীরে
অভিজ্ঞতা সঞ্চারে
লেখার বাহুল্য নিয়ে
‘এল ডি’ -তে এসে থামলো।
তারপর পূণঃ যাত্রা
‘এল ডি’র মতামত নিয়ে
নাচের মহড়া দিয়ে
মতামত আরো নিয়ে
মন্ত্রী সাহেবের কাছে থামলো।
তিনি নমনীয় নির্দেশে
লিখলেন- “ঠিক আছে কিংবা নাই”।
এসব দৃশ্যের মাঝে
মনে হয় একী প্রেতপুরী?
নাকি লক্ষিন্দরের নিচ্ছিদ্র
লৌহ বাসর?
মানুষের ভাগ্য বিধাতারা বসে
ভাগ্য রচে জনে জনে
আঁক কষে, অংক করে
মিলিয়ন বিলিয়নে
অথচ মানুষের ভাগ্যে জুটে শূণ্য হাহাকার
তাই আজ শোষিতের শ্লোগান
নিপাত যাক আমলাতন্ত্র, ধনতন্ত্র, সবতন্ত্র
গাও সবে মহামুক্তির গান।
No comments:
Post a Comment